১১ বছরের বিকাশ
পোস্ট করেছেন bKash
২৩ মে ২০২৩ | ৭ মিনিটের পাঠ্য
এক দশকেরও বেশি সময়ের যাত্রায় বিকাশ এখন শুধু একটি কোম্পানি নয়, বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য অর্জন, মাইলফলক আর অতুলনীয় সব গল্পের ভিড়ে বিকাশ আজ তার কর্মীদের জন্য এক পরিবার, যুগান্তকারী সব উদ্ভাবনের কর্ণধার, প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা ও কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠাসহ আর বহু ক্ষেত্রে অবদান রেখে সৃষ্টি করেছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এই ১১ বছরে, বিকাশ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে এতটাই গভীর প্রভাব ফেলেছে যে, মানুষের কাছে ‘বিকাশ’ এখন বিশেষ্যের পরিবর্তে ক্রিয়া হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিকাশ সম্পর্কে এখন দেশজুড়ে সকলেই দেখে, জানে, অথবা শুনে। গ্রাহকরা এখন আর "আমাকে টাকা পাঠাও" বলেন না, বলেন "বিকাশ করো" বলেন। তাই শুরু থেকে যেভাবে সবসময় সব প্রয়োজনে বিকাশ মানুষের পাশে আছে, ঠিক তেমনই আজও ক্রমবর্ধমানভাবে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিকাশ-এর যাত্রা একটি ধারণা থেকে শুরু হলেও, উদ্ভাবনকে শক্তি করে বিকাশ আর্থিক লেনদেনকে জনমানুষের কাছে আরও সহজ ও বিস্তৃত করেছে। বিকাশ যখন, যেখানেই কোনো সমস্যা দেখেছে, তখনই উদ্ভাবনী সমাধানের সুযোগ নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে। সেই একই চিন্তাধারা থেকে বিকাশও সরকারের ডিজিটাল ভিশনকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করে। ব্যাংকিং সেবার বহির্ভূত এবং অন্তর্ভুক্ত - সকল মানুষের কাছে এখন কোনো ঝামেলা ছাড়াই টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করার একটি মাধ্যম হয়ে গিয়েছে বিকাশ। বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে ক্রমাগত অগ্রসর হওয়ার পথে বিকাশ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। বিকাশ দেশের অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ডিজিটালাইজেশন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি কার্যকর সমন্বয় তৈরি করে যা বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের মানুষদের ক্ষমতায়ন করেছে।
১১ বছর আগে, বিকাশ-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও কামাল কাদির, স্বল্প আয়ের মানুষদের মোবাইল আর্থিক সেবায় আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন, কেননা তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে তাদের দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ব্যাংক দ্বারা পূরণ করার জন্য যুক্তিসঙ্গত নয়। যার ফলে, জনসংখ্যার একটি বড় অংশ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে থেকে যায়। তিনি সেই দৃশ্যপটকে পাল্টে দিতে সফল হয়েছেন এবং এখনও আরো উদ্ভাবনী এবং মোবাইলভিত্তিক আর্থিক সেবার আওতায় আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নিয়মিত লেনদেন করে এমন কোটি কোটি ব্যবহারকারীকে বিকাশ এখন অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিকাশ আজ একটি বিস্তৃত এজেন্ট নেটওয়ার্ক তৈরি করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে, সকলের মাঝে একটি চলমান এটিএম হিসেবে কাজ করছে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে। শুধু তাই নয়, বিকাশ আজ হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে এবং যখন প্রয়োজন, তখনই অর্থের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছে।
বিকাশ কোটি প্রাণে এক বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে এবং ১১ বছর ধরে আর্থিক লেনদেনের অনন্য প্রাণশক্তি হয়ে উঠেছে। বিকাশ কখনোই সামাজিক বৈষম্যে বিশ্বাস করেনা, এমনকি সর্বস্তরের মানুষের কথা ভেবেই সেবা দিয়ে থাকে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সেবাগুলোকে সকলের প্রয়োজনে প্রভাব রাখাতেই বিকাশ-এর বিশ্বাস। একারণেই হোক দামি কিংবা কম দামি, বিকাশ গ্রাহকরা স্মার্টফোন কিংবা সাধারণ ফোনেই বিকাশ এর সেবা গ্রহণ করতে পারেন। বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে যে কেউ বিকাশ একাউন্ট পারে বলেই বিকাশ-এর মাধ্যমে লেনদেন সবচেয়ে নিরাপদ।
প্রতিদিন উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে বিকাশ অ্যাপ লেনদেনগুলোকে আরো সহজ করেছে এবং সময়ের সাথে গ্রাহকরা একের পর এক সময়োপযোগী ফিচারগুলো ব্যবহার করতে পারছেন। গ্রাহকরা এখন বিকাশ এর মাধ্যমে সহজেই টাকা পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে পারলেও এখন শুধু তাতে সীমাবদ্ধ নয়। মোবাইল রিচার্জ, মার্চেন্ট পেমেন্ট, ক্যাশ আউট, ব্যাংক/কার্ড থেকে বিকাশ একাউন্টে টাকা দেওয়া এবং নেওয়া, দেশজুড়ে বিস্তৃত পরিসরে ইউটিলিটি বিল প্রদান, টাকা অনুদান করা, সেভিংস খোলা, ডিজিটাল ন্যানো লোন নেওয়া এবং আরও অনেক কিছু করা যায় এই বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেই।
সারাদেশে নিজের পদচ্ছাপ রেখে যাওয়ার পাশাপাশি বিকাশ তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের জীবনেও একইভাবে প্রভাব ফেলেছে। টানা তৃতীয়বারের মতো বিকাশ বাংলাদেশের নাম্বার ১ এমপ্লয়ার অফ চয়েস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিকাশ উল্লেখযোগ্যভাবে দেশের প্রতিভাবানদের নিয়োগ করে এবং সফলভাবে তাদের নিজের পথচলা অব্যাহত রেখেছে। বিকাশ-এর কর্মীদের সন্তুষ্টিতে বিশ্বাসী, যা শুধুমাত্র স্বীকৃতিভিত্তিক কর্মসংস্কৃতির ফলেই সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে, বিকাশ-এর মার্কেটিং, এইচআর, কমার্শিয়াল, প্রোডাক্ট অ্যান্ড টেকনোলজি, ফাইন্যান্স অ্যান্ড একাউন্টস, কমিউনিকেশনস, কাস্টমার সার্ভিস, এক্সটারনাল অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, ইন্টারনাল কন্ট্রোল, এন্টারপ্রাইজ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লিগ্যালসহ বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। যেখানে কর্মীরা তাদের সম্ভাবনার দুয়ারকে নতুন মাইলফলক দিতে আস্থার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। বিকাশ তার কর্মীদের কর্মজীবনকে আরও বিকশিত করতে উৎসাহ দিয়ে থাকে, যেন কর্মীরা তাদের নিজ দায়িত্বে সম্পূর্ণ নিষ্ঠা এবং শতভাগ কর্মদক্ষতা সাথে কাজ করতে পারেন।
বিগত ১১ বছরে, বিকাশ অসংখ্য স্বপ্নপূরণ এবং অর্জনের কারিগর। এক দশকের বেশি সময় ধরে সবার ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম, সাফল্য এবং আরও অনেক কিছু সাথে নিয়েই বিকাশ আজকের এই অবস্থানে। দেশের মানুষ এবং তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোই বিকাশ-এর এগিয়ে যাওয়ার চালিকাশক্তি এবং তা পূরণের লক্ষ্য নিয়েই বিকাশ সবসময় দেশ ও জনগণের সেবা করে যেতে চায়। ১১ বছরের সাফল্যযাত্রা অতিবাহিত হলেও বিকাশ সামনে আরও অনেককিছু নিয়ে আসতে চায় জনগণের জন্য। বিগত বছরগুলোর সাফল্য, ব্যর্থতা, অর্জন, হতাশা এবং শিক্ষাগুলোকে সাথে নিয়েই বিকাশ তার আগামীর যাত্রা শুরু করতে চায় দুরন্ত গতিতে।